মোঃ মিরাজ হোসেন বরগুনা প্রতিনিধি: করোনার প্রথম অভিঘাত কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয়বারের মতো আবারো করোনা ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। দেশব্যাপী মৃত্যুর মিছিলে বাড়ছে মানুষের সংখ্যা। তাই বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে আবারো দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। গত ১২ এপ্রিল ১৩ টি বিষয়ের উপরে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যা কঠোরভাবে বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ।
গতকাল সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে মোতাবেক পহেলা বৈশাখের দিনে আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে লকডাউন বাস্তবায়নে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশ্রাফুল ইসলাম শহর ও শহরের বাইরে শহরতলিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে রমজানের প্রথমদিন হওয়া সত্ত্বেও কড়া রোদ্দুরের মাঝেও ছুঁটে বেড়িয়েছেন। বলেছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে এড়িয়ে চলতে সর্বসাধরণের জন্য করণীয় বিষয়ক বার্তা। তাঁর সঙ্গে ছিল জেলা প্রশাসনের একাধিক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা পুলিশ ও জেলা আনসার বাহিনীর অফিসারগণ। জনসচেতনতার পাশাপাশি তারা স্বাস্থ্যবিধি ও প্রচলিত আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেন। দুপুরের রোদ্দুরে শহরের জিরো পয়েন্ট (ট্রাফিক মোড়) সহ অলিগলিতে দেখা গেছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার্স) মহরম আলীকে। এসময় অহেতুক বাহিরে ঘোরাফেরারত ও হেলমেট এবং কাগজপত্র বিহীন মটরসাইকেল আটক করতে দেখা যায়। যার মধ্যে বাদ পড়েনি পুলিশের সদস্যগণও। খেপে গিয়ে কর্তব্যরত এ পুলিশ কর্মকর্তার সাথে খারাপ আচরণ ও ছোট ভাই পুলিশ কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে ছুটে যাবার পায়তারা করেছেন পটুয়ালী শিক্ষা অধিদপ্তরের একজন কর্তাব্যক্তি পরে তাকেও আইনের আওতায় আনা হয়।
দিনভর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান, আরিফ উল্লাহ নিজামী ও নাজমুল হাসানকে ও দেখা গেছে মাঠে। যারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে করোনার শুরু থেকেই নির্ভীক হয়ে ছুটেছেন গভীর রাতেও। না খেয়ে থাকা পরিবারের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন খাবার। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েও মাঠে থেকে দক্ষ কর্মকর্তার পরিচয় বহন করেছেন বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
জেলা প্রশাসনের সাথে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা ও মাস্ক বিতরণে রেড ক্রিসেন্ট বরগুনা ইউনিটের কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম কিবরিয়া পিন্টু ও যুব প্রধান মেহেদী হাসান মুসার নেতৃত্বে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বরগুনা ইউনিট এর যুব সদস্যরাও সরকারকে সহযোগিতা করেছেন। এরাও করোনা সংক্রমণের প্রথম থেকে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি প্রচার করে যাচ্ছেন করোনার ভয়াবহতা। মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান করছেন বিশেষভাবে।
এসময় যে সকল অত্যাবশ্যকীয় ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খোলা থাকবে তাদের সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য বিশেষ অনুরোধ করা হয় এবং বিনা প্রয়োজনে জনসাধারণকে বাহিরে ঘোরাফেরা না করার জন্যও অনুরোধ করা হয়।
দেশের সকল মানুষের সম্মিলিত সহযোগিতাই পারবে এই করোনা মহামারীর হাত থেকে সাধারণ নাগরিকদের রক্ষা করতে। প্রধানমন্ত্রী মহান আল্লাহর কাছে রমজানে বেশিবেশি দোয়া করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
Leave a Reply