অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মো. মামুনুর রশীদকে ঢাকা থেকে বরিশাল বিভাগে বদলি করা হয়েছে। লকডাউন চলাকালে সম্প্রতি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে এক নারী চিকিৎসকের পরিচয়পত্র দেখা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ওই চিকিৎসকের বাগ্বিতণ্ডার সময় সেখানে প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দায়িত্বে ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তাকে বদলি করা হয়েছে। তার বদলির বিষয়টি আগে থেকেই প্রক্রিয়াধীন ছিল।
গত রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় নিরাপত্তা চৌকিতে দায়িত্ব পালনরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক নারী চিকিৎসকের পরিচয়পত্র দেখতে চান। ওই চিকিৎসক নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায় ওই নারী চিকিৎসকের পরিচয়পত্র দেখতে চান পুলিশ সদস্যরা। ঘটনার সময় উত্তেজিত হয়ে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা করতে দেখা যায় ওই চিকিৎসককে। তাকে উত্তেজিত ভঙ্গিতে কথা বলতে শোনা যায় এবং অস্বাভাবিক রকমের শব্দও উচ্চারণ করতে শোনা যায়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হয়।
এই ঘটনার পর চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেয়। যা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়।
চিকিৎসকের দাবি, চিকিৎসককে ইচ্ছা করে হয়রানি করা হয়েছে। তার গাড়িতে লকডাউনের সময় হাসপাতালে কাজ করার আদেশনামা ছিল, পরনে অ্যাপ্রোন ছিল এবং গাড়িতে হাসপাতালের স্টিকার লাগানো ছিল। আর পুলিশের পক্ষের দাবি, চিকিৎসক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেছেন এবং গালি দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি, কে বড়- পুলিশ, নাকি ডাক্তার? এমন প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন।’
এদিকে ওই চিকিৎসক নিজ মন্ত্রণালয়ের বৈধ আদেশ লঙ্ঘন এবং ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন উল্লেখ করে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানানো হয় পুলিশের একাধিক বিবৃতিতে।
এর আগে বিএমএ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে এলিফ্যান্ট রোডে চিকিৎসককে হেনস্তায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছিল।ওই দিনের ঘটনার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংবাদ সম্মলন থেকে চিকিৎসকদের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। চেকপোস্টে ‘চাহিবামাত্র তা প্রদর্শনেরও’ অনুরোধ করেছে।
Leave a Reply